এবিএনএ: চলতি বছরের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা ৪৭ মিনিটে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে এ ফল ঘোষণা করেন। এদিন শিক্ষার্থীদের মাঝে বিনা মূল্যে বই বিতরণ উদ্বোধন অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি সকল শিক্ষাবোর্ডের ফলাফল ঘোষণা করছি। ফলাফল ওয়েবসাইটে পৌঁছে যাবে এবং অনলাইনেও জানা যাবে।’ প্রকাশিত ফলাফলে দেখা গেছে, নয়টি সাধারণ শিক্ষাবোর্ড, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাবোর্ড মিলে এবার পাসের হার ৯৩.৫৮। এর মধ্যে কারিগরিতে পাসের হার ৮৮.৪৯ শতাংশ ও দাখিলে পাসের হার ৯৩.২২ শতাংশ। আর নয়টি সাধারণ শিক্ষাবোর্ডে পাসের হার ৯৪.০৮।
সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে মোট পরীক্ষার্থী ছিল ১৭ লাখ ৯২ হাজার ৩১২ জন। পাস করেছে ১৬ লাখ ৮৬ হাজার ২১১ জন। পাসের হার ৯৪ দশমিক ০৮। মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের ২ লাখ ৯২ হাজার ৫৬৯ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছে ২ লাখ ৭২ হাজার ৭২২ জন। পাসের হার ৯৩ দশমিক ২২ শতাংশ। কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ১ লাখ ৫৫ হাজার ৫১৪ জন পরীক্ষা দিয়েছে। এর মধ্যে পাস করেছে ১ লাখ ৩৭ হাজার ৬১৩ জন। পাসের হার ৮৮ দশমিক ৪৯। তাছাড়া, বিদেশের ৯টি কেন্দ্রে ৪১৬ জন অংশ নেয়। এর মধ্যে পাস করেছে ৩৯৮ জন। পাসের হার ৯৫ দশমিক ৬৭ শতাংশ। এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় মোট পরীক্ষার্থী ছিল ২২ লাখ ৪০ হাজার ৩৯৫ জন। এর মধ্য উত্তীর্ণ হয়েছে ২০ লাখ ৯৬ হাজার ৫৪৬ জন। পাসের হার ৯৩ দশমিক ৫৮ শতাংশ।
চট্টগ্রাম বোর্ডে পাসের হার ৯১.১২ শতাংশ ও জিপিএ ফাইভ পেয়েছেন ১২ হাজার ৭৯১ জন, কুমিল্লায় পাসের হার ৯৬.২৭ শতাংশ, ঢাকায় পাসের হার ৯০.১২ শতাংশ, দিনাজপুরে পাসের হার ৯৪.৮০ শতাংশ ও জিপিএ ফাইভ পেয়েছেন ১৫ হাজার ৫৭৮ জন, সিলেটে পাসের হার ৯৬.৭৮ শতাংশ ও জিপিএ ফাইভ পেয়েছেন ৪ হাজার ৮৩৪ জন, যশোরে পাসের হার ৯৩.০৯ শতাংশ ও জিপিএ ফাইভ পেয়েছেন ১৬ হাজার ৪৬১ জন, ময়মনসিংহে পাসের হার ৯৭.৫২ শতাংশ ও জিপিএ ফাইভ পেয়েছেন ১০ হাজার ৫২ জন, বরিশালে পাসের হার ৯০.১৯ শতাংশ ও জিপিএ ফাইভ পেয়েছেন ১০ হাজার ২১৯ জন, রাজশাহীতে পাসের হার ৯৪.৭১ শতাংশ ও জিপিএ ফাইভ পেয়েছেন ২৭ হাজার ৭০৯ জন।
করোনা মহামারির কারণে চলতি বছর নির্ধারিত সময়ে অনুষ্ঠিত হতে পারেনি এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। সংক্রমণ কিছুটা কমে এলে নির্ধারিত সময়ের সাড়ে আট মাস পর গত ১৪ নভেম্বর এসএসসি পরীক্ষা শুরু হয়। পরীক্ষায় ২২ লাখ ২৭ হাজার ১১৩ জন শিক্ষার্থী অংশ নেন। করোনার কারণে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে এ পরীক্ষা নেয়া হয়।
গতবারের চেয়ে এবার পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১ লাখ ৭৯ হাজার ৩৩৪ জন বেড়েছে। গতবার পরীক্ষার্থী ছিল ২০ লাখ ৪৭ হাজার ৭৭৯ জন। এবারের এসএসসি পরীক্ষা হয় শুধু নৈর্বাচনিক বিষয়ে। অন্যান্য আবশ্যিক বিষয়ে আগের পাবলিক পরীক্ষার সাবজেক্ট ম্যাপিং করে মূল্যায়নের মাধ্যমে নম্বর দেয়া হয়। বেলা ১২টায় একযোগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, অনলাইন ও মোবাইল ফোনে এসএমএসের মাধ্যমে ফল জানা যাবে।
যেভাবে জানা যাবে ফল
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট http://www.educationboardresults.gov.bd ওয়েবসাইট ভিজিট করে ফলাফল জানা যাবে। ওয়েবসাইটে রোল নম্বর, পরীক্ষার (Examination) নাম এবং বোর্ড সিলেক্ট করে সাবমিট বাটনে ক্লিক করে ফলাফল জানা যাবে।
মোবাইলে ফল
এছাড়া, মোবাইলে এসএমএস-এর মাধ্যমেও ফল জানা যাবে। সেজন্য মেসেজ অপশনে গিয়ে SSC লিখে স্পেস দিয়ে বোর্ডের নামের প্রথম তিন অক্ষর লিখে স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে আবার স্পেস দিয়ে পাসের বছর লিখে পাঠাতে হবে ১৬২২২ নম্বরে। উদাহরণস্বরূপ : SSC DHA 123456 2021 লিখে পাঠাতে হবে ১৬২২২ নম্বরে।
মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের জন্য DAKHIL লিখে স্পেস দিয়ে বোর্ডের নামের প্রথম তিন অক্ষর লিখে আবার স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে পাসের সাল লিখে পাঠাতে হবে ১৬২২২ নম্বরে। উদাহরণস্বরূপ : DAKHIL MAD 123456 2021 লিখে পাঠাতে হবে ১৬২২২ নম্বরে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হলে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হয়। দেড় বছর পর ১২ সেপ্টেম্বর খুলে দেয়া হয় প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।